তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন জন বার্লা

বাংলার চাণক্য নিউজ ডেস্ক:- সমস্ত জল্পনা কল্পনার অবসান। শেষমেষ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন জন বার্লা। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সুব্রত বক্সী ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগদান করলেন জন বার্লা। তিনি আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ। এদিন তাঁকে পাশে বসিয়ে সুব্রত বক্সী বলেন, ‘রাজ্য বিজেপিতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন বার্লার। মমতার কর্মকাণ্ডে খুশি হয়ে তিনি তৃণমূলে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন । তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁর আবেদন অনুমোদন করেছেন। বার্লারের অভিযোগ ‘উন্নয়নের কাছে প্রতিমূহূর্তে বাধা দিচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী’। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরাজ প্রশংসাও করেছেন প্রাক্তন বিজেপি সংসদ। তৃণমূলে যোগ দিয়ে বার্লার এদিন বলেন, ‘ছয় সাত মাস ধরে কথা চলছিল। দিদি ফোন করে কাজ করতে বলেছিলেন। আমি চা বলয় থেকে গিয়ে যখন মন্ত্রী হলাম। প্রত্যেকটা কাজে আমাকে বাধার মুখে পড়তে হতো। দলবদল প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বিরোধী দলনেতাকে দায়ী করেন জন বার্লা। ।তাঁর অভিযোগ নিজের লোকসভা কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রীর জন বিকাশ প্রকল্পে ১৬০ কোটি টাকা রেলের হাসপাতাল তৈরি করতে চেয়েছিলেন। আর্থিক বরাদ্দ হওয়ার পরেও কেন্দ্র থেকে তাঁকে জানানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সংগঠন থেকে এ বিষয়ে আপত্তি করা হয়েছে। তাই হাসপাতালের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বার্লারের আরো দাবি তখন খোঁজ নিয়ে জেনেছিলেম। শুভেন্দু অধিকারী হস্তক্ষেপ শেষ পর্যন্ত আলিপুরদুয়ারের রেল হাসপাতালটি তৈরি করা যায়নি। বার্লা বলেন, “ ১৬০ কোটি টাকা হাসপাতাল করতে চেয়েছিলাম। আমাকে আমার দলের লোক করতে দেয়নি। এখান থেকে দিল্লিতে ফোন করে আমাকে আটকানো হয়। এভাবে উন্নয়নের কাজ আটকাল। কে ওই পার্টি করবে? কি করব ওই দলে থেকে”? যদিও বিরোধী দল নেতা এই অভিযোগে প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বার্লা আক্ষেপপেরে সুরে বলেন, ‘জনতা আমাকে ভোট দিয়ে পাঠিয়েছিলেন কাজ করার জন্য। কিন্তু কাজ করতে পারতাম না। চা বাগানের মানুষ ভোটে বিজেপিকে জেতালো,অথচ একটু জমি দিল না ওরা। দিদি ৫ ডেসিমেল জায়গা দিয়েছে। চা বাগানে আমাদের জায়গা তো মিলেছে। লক্ষীর ভান্ডারের মত প্রকল্পে ফলে চা বাগানের বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চা বাগানের একাধিক বিষয়ে, চা শ্রমিকদের নিয়ে কথা বলবেন বলেও এদিন তিনি জানান ।
জন বার্লা তৃণমূলের যোগদান প্রসঙ্গে সুব্রত বক্সী বলেন, বার্লার যোগদান চা বাগানে দলের সংগঠন আরো শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি রাজ্য স্তর এবং চা বাগান দুই ক্ষেত্রেই বার্লার কাজ করবেন। বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ বার্লারের দল বদলের বিষয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরই তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরে উনি চেষ্টা করছিলেন। দল ওকে অনেক সুযোগ দিয়েছিল। তবে কেন দল বদল করলেন, উনি নিজেই বলতে পারবেন’।
তবে ২৬ এর নির্বাচনের আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই দলত্যাগ উত্তরবঙ্গের ভোটে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল। কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, চা বলয়ে তাঁর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে ।