
বাংলার চাণক্য নিউজ ডেস্ক:- আগামী ২২শে মার্চ লন্ডনের উদ্যেশে রওনা দেবেন মুখ্যুমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সেখানে তাঁর একাধিক কর্মসূচী রয়েছে।সেই সঙ্গে বিদেশের কলেজে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ ওপেয়েছেন তিনি। সে বিষয়ে আগে থেকেই জানা গিয়েছিল ।আর বিদেশে যাওয়ার আগে। আজ নবান্ন থেকে নাম না করে বিরোধীদের নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি সরাসরি অভিযোগ করলেন, বিদেশ সফরের আগে ইমেইল পাঠিয়ে তাঁর নামে খারাপ কথা বলা হয়েছে। দেশের অন্যান্য নেতারা যখন বিদেশ সফরে যান তাঁরা কারোর নাম নিয়ে কোন কথা বলেন না। কিন্তু তাঁর বেলায় ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
বিদেশ সফরের আগেই বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেন,”আমাদের কোন নেতা যখন বাইরে যান আমরা তাদের অসম্মান করি না। অবমাননাকর কিছু লিখি না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হল,কিছু গণশত্রু রয়েছে, গোটা দেশে তো বটেই, আমাদের রাজ্যে বিশেষ করে নোংরা খেলা খেলছে। whatsapp গ্রুপ এবং ইমেইলের মাধ্যমে খসড়া তৈরি করে পাঠাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, আমরা বাংলার লোকজন খুব খারাপ”।
তিনি এদিন আরো বলেন, “আমার কোন সমস্যা নেই। আমার বিরোধী হলেও ,ওদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। আমার কোন দুঃখ নেই। প্রথম থেকে লড়াই করে আসছি, আমার লড়াইয়ের কথা তাঁরা জানেন। কাদের জন্য আমি প্রায় মারা যাচ্ছিলাম? এদের জন্য যারা চিঠি লিখছে পাঠাচ্ছে whatsapp গ্রুপে ছড়াচ্ছে, বাংলাকে এভাবে অপমান না করে। বাংলা মাকে যদি অসম্মান করতে চান কেউ,বলবো আমাকে অসম্মান করুন ।বাংলার মাকে অসম্মান করবেন না,বাংলার মাটিকে অসম্মান করবেন না। এর জবাব মানুষ আপনাদের দিয়েছে অনেকবার ,আবার দেবে। আমরা কিন্তু ইমেইল গুলি পাঠিয়েছি,whatsapp গ্রুপের মেসেজ ও আছে কিছু কিছু”। পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমাকে বলুন আমার ডিগ্রী কখনো ব্যবহার করেছি আমি। সেন্ট জেভিয়ার্স আমাকে সাম্মানিক ডিলিট দিয়েছে। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও দিয়েছে। আমি কি নামের আগে ডক্টরেট লিখি? আমি লিখি না। যদি পড়াশোনা করে থাকি, যদি ভিখারি ও হই, আমি অতি সাধারণ হলেও, আমি যদি বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়েছি কিন্তু সাধারণ বলে অপমান করতে পারেন না। শিক্ষার অধিকার মানব সভ্যতার। মানবিকতার ,শিক্ষা অপমান করতে শেখায় না। আমাকে অসম্মান করতে গিয়ে, আমার মাতৃভূমিকে অসম্মান করবেন না। আমার বিনীত অনুরোধ”।
সেই সাথে এদিন তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডেকেছে ,কি প্রশ্ন রাখা হবে কি রাখা হবে না তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি সব প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, “প্রথমে নিজেকে সম্মান করতে জানতে হয়, নিজের মাতৃভূমি, নিজের দেশকে সম্মান করতে হয়। কিন্তু দেশের প্রতি কোন অবদান নেই এমন কিছু মানুষ, বিপ্লবের নামে টাকা তোলেন আর অন্যদের লড়াইকে অসম্মান করেন। অন্যদের বদনাম করেন।
পাশাপাশি এদিন তিনি জানিয়েছেন,জাপান পোল্যান্ডের মতো দেশ থেকে খুব আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তিনি কিন্তু ব্রিটেনের সঙ্গে বাংলার অনেকদিনের সম্পর্ক, রাজনৈতিক সংস্কৃতিক যোগ রয়েছে পরস্পরের মধ্যে। আর সেই প্রসঙ্গে নাম না করে বিরোধীদের উদ্যেশে তিনি বলেন, “অন্য দেশ থেকে ইমেইল গুলি পেয়েছি ভার্চুয়ালি অনেকে থাকছেন। গণশত্রুরা কিভাবে? আমার পরিচিত কেউ নেই? আমাদেরও পরিচিত অনেকে বিদেশে থাকেন। আমাদের অফিসারের ছেলে মেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করেন। আমি নিশ্চয়ই চাইবো না তাঁরা আপনাদের বিরুদ্ধে একই কাজ করুন ।আসলে ইর্ষার কোনো ওষুধ নেই। আমাদের আবিষ্কার করতে হবে। এসব চালাকি কখনো কখনো চলে যায়, কিন্তু সর্বদা চলে না। কখনো কখনো মানুষকে বোকা বানানো যায়, চিরকাল যায় না”।
বর্তমানে বাম, উগ্রবাম এবং সাম্প্রদায়িক দলের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দাবি করেন। পাশাপাশি বাংলার নির্বাচনে ছাপ্পা ভোট হয় বলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে বলেও এদিন তিনি দাবি করেন।। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, রাজ্য রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের নজরদারিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়। তিনি জানান সাহস থাকলে সরাসরি তাঁকে প্রশ্ন করা উচিত। নিজের ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন ,”অ্যায়ম ভেরি বোল্ড, ভেরি স্ট্রং, আই হ্যাভ দ্যাট কনফিডেন্স। আমি শুধু গণশত্রুদের ব্যাপারে জানিয়ে গেলাম”।
পাশাপাশি বিদেশে থাকাকালীন রাজ্যের কোন সমস্যা যাতে না হয়। তার সঙ্গে সবসময় যাতে যোগাযোগ রাখা যায় তার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি আগামী ২২ তারিখ অর্থাৎ শনিবার লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে । তাঁর এই বিদেশ যাত্রা সময় রাজ্যের প্রশাসনের নজরদারির কাজ চালাবেন মন্ত্রী, সচিব এবং পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে ভাগ করে দিলেন তিনি। গঠন করা হয়েছে টাস্ক ফোর্স । এখানে রয়েছে ভূমি দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বিবেক কুমার,অর্থ সচিব প্রভাত মিশ্র, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিজি রাজীব কুমার এবং কোলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা। এছাড়া পাঁচ জন মন্ত্রীকে সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা হলেন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, সুজিত বসু, অরূপ বিশ্বাস এবং ফিরহাদ হাকিম । এদিন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রীর এবিষয় গুলি জানানোর পাশাপাশি তিনি বলেন, কোন কিছু ঘটলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেই এই কাজ করবে এই টাস্ক ফোর্স।

ADVT

ADVT

ADVT

ADVT

ADVT

খবর এবং বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন:- ৯১৫৩০৪৩৩৮০